কেন্দ্রীয় সংগঠন
ধারা-১২: কেন্দ্রীয় সংগঠন, কেন্দ্রীয় সভাপতি, কার্যকরী পরিষদ এবং একটি সেক্রেটারিয়েট- এর সমন্বয়ে গঠিত হবে।কেন্দ্রীয় সভাপতি
ধারা-১৩: এই সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সংগঠনের সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে এক বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন।ধারা-১৪: যদি কোন কারণবশতঃ কেন্দ্রীয় সভাপতির পদ স্থায়ীভাবে শূন্য হয় তাহলে কার্যকরী পরিষদ, পরিষদের মধ্যে থেকে একজনকে সাময়িকভাবে কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত করে যথাশীঘ্র সম্ভব সদস্যদের ভোটে সেশনের অবশিষ্ট সময়ের জন্য কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। যদি কেন্দ্রীয় সভাপতি সাময়িকভাবে ছুটি গ্রহণে বাধ্য হন তাহলে তিনি কার্যকরী পরিষদের সাথে পরামর্শ করে পরিষদের মধ্যে থেকে তিন মাসের জন্য অস্থায়ী সভাপতি নিযুক্ত করতে পারবেন।
ধারা-১৫: কেন্দ্রীয় সভাপতি বা অস্থায়ী সভাপতি নির্বাচিত বা নিযুক্ত হবার পর কার্যভার গ্রহণের পূর্বে সদস্যদের সম্মেলনে অথবা কার্যকরী পরিষদের অধিবেশনে সংবিধানের পরিশিষ্টে বর্ণিত সভাপতির শপথ গ্রহণ করবেন।
ধারা-১৬: কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে, এই সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য হাসিল, পরিচালনা, কর্মসূচির বাস্তবায়ন এবং সর্বোৎকৃষ্ট সাংগঠনিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও সংরক্ষণ।
ধারা-১৭: কেন্দ্রীয় সভাপতি সব সময় কার্যকরী পরিষদের পরামর্শ অনুসারে কাজ করবেন। কিন্তু দৈনন্দিন কাজ সম্পাদন ও কার্যকরী পরিষদের সিদ্ধান্ত নেই এমন কোন বিষয়ে জরুরী ও সাময়িক পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন হলে তিনি এ নিয়মের অধীন থাকবেন না।
ধারা-১৮: সংবিধানের বিভিন্ন ধারায় কেন্দ্রীয় সভাপিতকে যে সব ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে, তিনি নিজে অথবা কর্মীদের মাধ্যমে সেগুলো প্রয়োগ করতে পারবেন।
কার্যকরী পরিষদ
ধারা-১৯: সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে প্রতি একশত পঁয়তাল্লিশ জনে একজন হারে এবং অবশিষ্ট সংখ্যার জন্য একজন নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে কার্যকরী পরিষদ এক বছরের জন্য গঠিত হবে এবং সভাপতি প্রয়োজন বোধ করলে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের এক-তৃতীয়াংশের বেশি হবে না, এমন সংখ্যক সদস্যকে এবং কার্যকরী পরিষদের প্রাক্তন সদস্যদের মধ্য থেকে অনূর্ধ্ব দু’জনকে কার্যকরী পরিষদের পরামর্শক্রমে পরিষদের অন্তর্ভূক্ত করতে পারবেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি কার্যকরী পরিষদের সভাপতি থাকবেন এবং সেক্রেটারী জেনারেল পদাধিকার বলে কার্যকরী পরিষদের সদস্য হবেন।ধারা-২০: কার্যকরী পরিষদের সদস্যগণ কেন্দ্রীয় সভাপতির ব্যবস্থাপনায় শপথ গ্রহণ করবেন।
ধারা-২১: কার্যকরী পরিষদের কোন নির্বাচিত সদস্যদের পদ শূন্য হলে তিন মাসের মধ্যেই তা পূরণ করতে হবে।
ধারা-২২: সামগ্রিকভাবে কার্যকরী পরিষদের ও ব্যক্তিগতভাবে এর সদস্যদের দায়িত্ব হচ্ছে নিজেদের তত্ত্বাবধান, কেন্দ্রীয় সভাপতির তত্ত্বাবধান, সংগঠনে ইসলামী নীতির অনুসৃতির তত্ত্বাবধান, সংগঠনের কর্মসূচি বাস্তবায়নের তত্ত্বাবধান ও পর্যবেক্ষণ, সংবিধান অনুসৃতির তত্ত্বাবধান, সংগঠনের যে কোন ত্রুটি দূরীকরণ, সংগঠনের সামগ্রিক কাজের মৌলিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, কেন্দ্রীয় সভাপতিকে পরামর্শ দান, নিঃসংকোচে মত প্রকাশ এবং কার্যকরী পরিষদের অধিবেশনে নিয়মিত যোগদান অথবা অভিমত প্রেরণ।
ধারা-২৩: বছরে কার্যকরী পরিষদের দু’টি সাধারণ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রয়োজন বোধ করলে অথবা কার্যকরী পরিষদের এক-পঞ্চামাংশ সদস্য অথবা সংগঠনের সদস্যদের এক দশমাংশ কেন্দ্রীয় সভাপতির নিকট লিখিতভাবে দাবি করলে কার্যকরী পরিষদের অধিবেশন অবশ্যই অনুষ্ঠিত হবে। কার্যকরী পরিষদের অধিবেশন অনুষ্ঠানের দাবি পেশ করার দিন থেকে এক মাসের মধ্যেই অধিবেশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
ধারা-২৪: কার্যকরী পরিষদের অধিবেশনে পরিষদের মোট সদস্য সংখ্যার এক তৃতীয়াংশ সদস্য উপস্থিত হলেই কোরাম হবে। কিন্তু কোরাম না হওয়ার কারণে কোন অধিবেশন মূলতবী হলে পরবর্তী অধিবেশনের জন্য কোরামের প্রয়োজন হবে না। কার্যকরী পরিষদের প্রতিটি সিদ্ধান্ত উপস্থিত সদস্যদের অধিকাংশের মতানুযায়ী গৃহীত হবে।
ধারা-২৫: যদি কোন ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও কার্যকরী পরিষদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয় এবং যদি একে অপরের রায় মেনে নিতে না পারেন, তাহলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সংগঠনের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের মতানুযায়ী নির্ধারিত হবে।
সেক্রেটারিয়েট
ধারা-২৬: কেন্দ্রীয় সভাপতি কার্যকরী পরিষদের সাথে পরামর্শ করে সেক্রেটারী জেনারেল ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিভাগীয় সেক্রেটারীর সমন্বয়ে সেক্রেটারিয়েট গঠন করবেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি কার্যকরী পরিষদের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনবোধে পূর্ণ বা আংশিকভাবে তার সেক্রেটারিয়েট রদবদল করতে পারবেন।ধারা-২৭: সেক্রেটারী জেনারেলের সেক্রেটারিয়েটের বিভাগগুলোর কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার দায়িত্ব থাকবে। অধঃস্তন সংগঠনগুলোর ও কর্মীদের উপর দৃষ্টি রাখা এবং কেন্দ্রীয় সভাপতিকে সমস্ত বিষয়ে ওয়াকিফহাল রাখা তার দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত হবে।
ধারা-২৮: কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করাই সেক্রেটারিয়েটের দায়িত্ব ও কর্তব্য এবং সেক্রেটারিয়েট কাজের জন্য সভাপতির নিকট দায়ী থাকবে।
অন্যান্য স্তুর
ধারা-২৯: প্রয়োজন ও পরিস্থিতি অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সভাপতি কার্যকরী পরিষদের পরামর্শক্রমে সংগঠনের অন্যান্য স্তর উদ্ভাবন ও প্রশাসন পদ্ধতি নির্ধারণ করতে পারবেন।
সদস্য শাখা
ধারা-৩০: দু’য়ের অধিক সদস্য নিয়ে ‘সদস্য শাখা’ গঠিত হবে। সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে সদস্য শাখার সভাপতি এক বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন। অনিবার্য কারণে কেন্দ্রীয় সভাপতির নির্দেশে সদস্যগণ বছরের যে কোন সময়ে সদস্য শাখার সভাপতি নির্বাচিত করতে পারবেন।ধারা-৩১: কেন্দ্রীয় পরিকল্পনার ভিত্তিতে সংগঠনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও কেন্দ্রীয় সভাপতির নির্দেশাবলী পালনই সদস্য শাখার দায়িত্ব ও কর্তব্য।
সাথী শাখা
ধারা-৩২: যেখানে সদস্য শাখা নেই সেখানে দু’য়ের অধিক সাথী নিয়ে কেন্দ্রীয় সভাপতির অনুমোদনক্রমে ‘সাথী শাখা’ গঠিত হবে। সাথীদের প্রত্যক্ষ ভোটে এক বছরের জন্য সাথী শাখার সভাপতি নির্বাচিত হবেন।
নির্বাচন
ধারা-৩৩: নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচন পরিচালনা করবেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি কার্যকরী পরিষদের সাথে পরামর্শ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও দুইজন সহকারী নির্বাচন কমিশনার সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। সংগঠনের সর্ব পর্যায়ের নির্বাচন পদ্ধতি কার্যকরী পরিষদ নির্ধারণ করবেন।ধারা-৩৪: এই সংগঠনের সভাপতি বা কার্যকরী পরিষদের সদস্য বা অন্য কোন দায়িত্বশীল ব্যক্তি নির্বাচন করা কালে ব্যক্তির আল্লাহ ও রাসূল (স.)-এর প্রতি আনুগত্য, তাক্বওয়া, আদর্শের সঠিক জ্ঞানের পরিসর, সাংগঠনিক প্রজ্ঞা, শৃঙ্খলাবিধানের যোগ্যতা, মানসিক ভারসাম্য, উদ্ভাবনী ও বিশ্লেষণী শক্তি, কর্মের দৃঢ়তা, অনঢ় মনোবল, আমানতদারী এবং পদের প্রতি লোভহীনতার দিকে অবশ্যই নজর রাখতে হবে।
ধারা-৩৫: এই সংগঠনের যে কোন নির্বাচনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ক্যানভাসের অনুমতি থাকবে না। কারো পক্ষে বা বিপক্ষে কোন গ্রুপ সৃষ্টি করা যাবে না। তবে পরামর্শ নেয়াটা ক্যানভাসের অন্তর্ভুক্ত হবে না। নির্বাচনে সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোটপ্রাপ্ত ব্যক্তিই নির্বাচিত বলে ঘোষিত হবেন।
অর্থ-ব্যবস্থা
ধারা-৩৬: সংগঠনের প্রত্যেক স্তরে বায়তুলমাল থাকবে। কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের দান, সংগঠন-প্রকাশনীর মুনাফা এবং যাকাতই হবে বায়তুলমালের আয়ের উৎস।ধারা-৩৭: সংশ্লিষ্ট সভাপতি সংগঠনের কর্মসূচির বাস্তবায়ন ও অন্যান্য সাংগঠনিক কাজে বায়তুলমালের অর্থ ব্যয় করবেন।
ধারা-৩৮: বায়তুলমালের যাকাত সংগ্রহ করতে হলে পূর্বাহ্নে কেন্দ্রীয় সভাপতির অনুমতি নিতে হবে এবং যাকাত থেকে প্রাপ্ত অর্থের হিসাব পৃথক রাখতে হবে। এই অর্থ কেবলমাত্র শরীয়ত নির্ধারিত খাতে ব্যয় করা যাবে।